বিজেপি নেতারা কেউ ফিরেও তাকাননি : বিজেপি কর্মীর বাবার মৃতদেহ সৎকার করলো তৃণমূল

28th May 2021 10:54 pm বর্ধমান
বিজেপি নেতারা কেউ ফিরেও তাকাননি : বিজেপি কর্মীর বাবার মৃতদেহ সৎকার করলো তৃণমূল


প্রদীপ চট্টোপাধ্যায় ( বর্ধমান ) : করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হওয়ায় বিজেপি কর্মীর বাবার মৃতদেহ সৎকারে এগিয়ে এলেন না দলের কেউই ।তবে মুখ ফিরিয়ে নেননি  পূর্ব বর্ধমানের জামালপুর থানার পাঁচড়ার তৃণমূলের নেতা,কর্মী ও জনপ্রতিনিধিরা।তাঁরাই শুক্রবার দায়িত্ব নিয়ে বিজেপি কর্মী নীতিশ বালার বাবার মৃতদেহ সৎকারের ব্যবস্থা করলেন।পাঁচড়া গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান লালু হেমব্রম ও উপপ্রধান বিকাশ পাকড়ে শ্মশানে দাঁড়িয়ে থেকে বিজেপি কর্মী নীতিশ বালার বাবার দেহ সুষ্ঠ ভাবে সৎকার করালেন। তৃণমূলের নেতা ,কর্মী ও জনপ্রতিনিধিদের এই মহানুভবতার ভূয়সী প্রশংসা করেছেন মৃতর পরিবার পরিজন ও প্রতিবেশীরা । পাঁচড়া গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার প্রত্যন্ত গ্রাম হাবাসপুর । এই গ্রামের বিজেপি কর্মী নীতিশ বালার বাবা নলিনী বালা (৯০) কোভিড আক্রান্ত হন ।গত ২০ মে তাঁর কোভিড পজিটিভ ধরা পড়ে ।চিকিৎসা চললেও বৃদ্ধ নলিনী বালার শারীরিক অবস্থার  অবনতি হতে থাকে । শুক্রবার বেলায় তিনি বাড়িতেই  মারা যান । নলিনী বাবু মারা যাওয়ার পরেই তৈরি হয় বিপত্তি। কোভিড আক্রান্ত হয়ে মারা গিয়েছেন বলে ভয়ে বিজেপি কর্মী নীতিশ বালার পাশে তাঁর দলের কেউ যেমন  দাঁড়াতে  চান নি তেমন মুখ ফিরিয়ে নেন প্রতিবেশীরাও । মৃতদেহ দীর্ঘক্ষণ বাড়িতেই পড়ে থাকে । কিভাবে বাবার মৃতদেহ সৎকার করবেন তার কিছুই বুঝে উঠতে পারছিলেন না মৃতর ছেলে ।তিনি ঘরে বসে শুধে  চোখের জল ফেলেই চলে ছিলেন । পাঁচড়া গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান লালু হেমব্রম বলেন ,বিজেপি কর্মীর করোনা আক্রান্ত বাবার মৃতদেহ সৎকারে কেউ এগিয়ে যাচ্ছিলেন  না।  তাঁরা বিষয়টি জানতে পারার পরেই তৎপর হন   । উপপ্রধান বিকাশ পাকড়ে ও তিনি বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করেন । প্রধান বলেন , এরপরে তাঁরা সিদ্ধান্ত নেন এলাকার তৃণমূল কর্মীদের সঙ্গে নিয়ে তাঁরাই বিজেপি কর্মীর বাবায় মৃতদেহ সৎকার করবেন । সেই মত ব্লক প্রশাসনের কর্তাদের সাথে যোগাযোগ করে কয়েকটি ’কিট’ আনান । সেই ’কিট ’পড়ে দলের কর্মীরা মৃতদেহ বাড়ি থেকে তুলে  দামোদরের চরে থাকা শ্মশাণে নিয়ে যান । লালু হেমব্রম বলেন ,তিনি এবং উপপ্রধান বিকাশ পাকড়ে শ্মশানে দাঁড়িয়ে থেকে সুষ্ঠ ভাবে বিজেপি কর্মীর বাবার মৃতদেহ সৎকার করান । 

এবিষয়ে  জামালপুর ব্লক তৃণমূলের সভাপতি মেহেমুদ খাঁন বলেন,“তাঁদের দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়  মানুষের বিপদে আপদে পাশে দাঁড়ানোর কথা দলের কর্মীদের প্রতি মুহুর্তে বলেন । এদিন বিজেপি কর্মী নীতিশ বালার অসহায় অবস্থার কথা জানার পর  দায়িত্ব এড়িয়ে যায়নি তাঁদের  দলের নেতা,কর্মী ও জন প্রতিনিধিরা । তাঁরা রাজনৈতিক বিভেদ দূরে সরিয়ে রেখে বিজেপি কর্মীর বাবার  মৃতদেহ সৎকার করেছে । তবে বিজেপি দলের কর্মীর বিপদে কোনও বিজেপি নেতাদের পাশে না দাঁড়ানোটাই  সবথেকে লজ্জার“।  জামালপুরের  বিজেপি আহ্বায়ক জীতেন ডকাল এই বিষয়ে কোনও মন্তব্য এদিন করতে চান নি  ।





Others News

MEMARI . একবছর আগে আবেদন করেও মেলেনি জাতিগত শংসাপত্র : হন‍্যে হয়ে ঘুরছেন মা

MEMARI . একবছর আগে আবেদন করেও মেলেনি জাতিগত শংসাপত্র : হন‍্যে হয়ে ঘুরছেন মা


প্রদীপ চট্টোপাধ্যায় ( বর্ধমান ) : প্রায় এক বছর আগে আবেদন করেও মেয়ের জাতিগত শংসাপত্র মেলেনি । আবেদনকারীদের জাতি শংসাপত্র দেওয়ার
ক্ষেত্রে দেরি করা যাবেনা বলে জানিয়ে দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী।কিন্তু বাস্তবে ঠিক তার উল্টোটাই ঘটে চলেছে।প্রায় এক বছর আগে  চতুর্থ শ্রেণীতে পাঠরত মেয়ের ওবিসি শংসাপত্র পাওয়ার জন্য নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে  আবেদন করেছিলেন মা।কিন্তু মেয়ে কে পঞ্চম শ্রেণীতে ভর্তির সময় এগিয়ে আসলেও জাতি  শংসাপত্র আজও না মেলায় কার্যত হতাশ হয়ে পড়েছেন পূর্ব বর্ধমানের মেমারির রাধাকান্তপুর নিবাসী ঊর্মিলা দাস।ওবিসি শংসাপত্র পাবার জন্য ঊর্মিলাদেবী বৃহস্পতি বার মেমারি ১ ব্লক বিডিও অফিসে লিখিত ভাবে আবেদন জানিয়েছেন। শংসাপত্র পাবার জন্য বিডিও সাহেব কি ব্যবস্থা করেন সেদিকেই এখন তাকিয়ে ঊর্মিলাদেবী। 

বিডিওকে লিখিত আবেদনে ঊর্মিলাদেবী জানিয়েছেন ,তাঁর স্বামী মানিক দাস দৃষ্টিহীন প্রতিবন্ধী ।বছর ১০ বয়সী তাঁদের একমাত্র কন্যা গ্রামের বিদ্যালয়ে চতুর্থ শ্রেণীতে পাঠরত কালে তাঁর ওবিসি শংসাপত্র পাবার জন্য তিনি নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে চলতি বছরের ২৪ জানুয়ারী আবেদন করেছিলেন।  উর্মিলাদেবী বলেন ,তার পর থেকে দীর্ঘ সময় পেরিয়ে  গেলেও তিনি তাঁর মেয়ের ওবিসি শংসাপত্র পান না।মেয়ের পঞ্চম শ্রেণীতে ভর্তির সময় এগিয়ে আসায় গত অক্টোবর মাসের শেষের দিকে তিনি শংসাপত্রের বিষয়ে মেমারি ১ ব্লকের বিডিও অফিসে খোঁজ নিতে যান।জাতি শংসাপত্র বিষয়ের বায়িত্বে থাকা বিডিও অফিসের আধিকারিক তাঁকে অনলাইনে এই সংক্রান্ত একটি নথি বের করে আনতে বলেন । অনলাইনে সেই নথি বের করেনিয়ে তিনি ফের ওই আধিকারিকের কাছে যান । তা দেখার পর ওই আধিকারিক তাঁকে  ২০ দিন বাদে আসতে বলেন । ঊর্মিলাদেবী বলেন , তিনি ২৫ দিন বাদে যাবার পর ওই আধিকারিক তাঁকে গোপগন্তার ২ গ্রাম পঞ্চায়েতে গিয়ে খোঁজ নেবার কথা বলেন । তিনি এরপর গ্রামপঞ্চায়েত অফিসে খোঁজ নিতে যান । নথি ঘেঁটে পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ জানিয়ে দেয় তাঁর মেয়ের নামে কোন ওবিসি শংসাপত্র পঞ্চায়েতে আসে নি।ঊর্মিলাদেবী দাবী করেন ,এই ভাবে তিনি একবার বিডিও অফিস , আবার পঞ্চায়েত অফিসে দরবার করে চলেন । কিন্তু তাতে কাজের কাজ কিছু হয় না। মেয়ের ওবিসি শংসাপত্র পাবার জন্য  গত ১৩ ডিসেম্বর ফের তিনি বিডিও অফিসে যান ।ওই দিনও বিডিও অফিসের জাতি শংসাপত্র বিষয়ক বিভাগের আধিকারিক তাঁকে একই ভাবে পঞ্চায়েত অফিসে খোঁজ নিতে যেতে বলে দায় সারেন। পরদিন তিনি পঞ্চায়েত অফিসে খোঁজ নিতে গেলে পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ ফের জানিয়ে দেয় তাঁর মেয়ের নামে  ওবিসি শংসাপত্র পঞ্চায়েতে আসে নি । কেন মেয়ের জাতি শংসাপত্র পাচ্ছেন না সেই বিষয়ে  না পঞ্চায়েত না ব্লক প্রশাসনের কর্তৃপক্ষ কেউই তাঁকে কিছু জানাতে পারেন । ঊর্মিলাদেবী বলেন ,পঞ্চম শ্রেণিতে ভর্তির আগে তার মেয়ে যাতে ওবিসি শংসাপত্র পেয়ে যায় তার ব্যবস্থা করার জন্য এদিন তিনি বিডিওর কাছে লিখিত ভাবে আবেদন জানিয়েছেন । মেমারী ১ ব্লকের বিডিও আলী মহম্মদ ওলি উল্লাহ এদিন বলেন ,“জাতি শংসাপত্র পাবার জন্য হাজার হাজার আবেদন জমা পড়ছে । তবে ঊর্মিলাদেবীর কন্যা দ্রুত যাতে বিবিসি শংসাপত্র দ্রুথ পান সেই বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে “। মেমারির বিধায়ক মধুসূদন ভট্টাচার্য্য বলেন,’মেমারি  বিধানসভা এলাকার আবেদনকারীরা দ্রুত যাতে জাতি শংসাপত্র পান সেই বিষয়ে প্রশাসনকে আরও তৎপর হওয়ার কথা বলবো’।